বীথির চিকিৎসা শুরু আগামী এক সপ্তাহে
নাম না জানা এক অদ্ভুত রোগ বাসা বেঁধেছে বীথি আক্তারের শরীরে। (১২) বছরের শিশু বীথির বিনা খরচে চিকিৎসা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে চিকিৎসকরা। তবে কিছু টাকা জোগাড় করতে হবে তার পরিবারকে এমন কথাই জানান তার বাবা।
বীথির স্তন, ত্বক, দাঁতের চিকিৎসার জন্য মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। একই সঙ্গে তাকে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) পাঠানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে বলেও জানান বীথির চিকিৎসক ডা. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। এ বিষয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্ডোক্রিনোলজি (ডায়াবেটিস ও হরমোন) বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘বীথির চিকিৎসার জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ পাশে দাঁড়িয়েছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা বীথির পরীক্ষার পর তার সমস্যাগুলো বিশেষ কোনো রোগের মধ্যে ফেলতে পারছি না। আসলে তার তিনটা সমস্যা। এ কারণে হঠাৎ করে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া যাচ্ছে না। তার সমস্যাগুলো জন্মগত। বাংলাদেশে এ ধরনের রোগী এই প্রথম দেখলাম।’
তিনি বলেন, ‘এ পর্যন্ত হরমোনের যেসব পরীক্ষা করা হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, হরমোন স্বাভাবিক রয়েছে। এ ছাড়া হরমোনের আরো কিছু পরীক্ষা বাকি আছে। সেগুলো হয়ে গেলে আরো কিছু বিষয় হয়তো জানা যাবে। আমরা আশা করছি, আগামী এক মাসের মধ্যে একটা ভালো ফল আসবে।’
ফরিদ উদ্দিন বলেন, ‘বীথির স্কিন ও স্তনের চিকিৎসার জন্য মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। এ নিয়ে কাজ চলছে।আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে প্রথমে তার স্তনের সার্জারি করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে । তারপর মুখের লোমের চিকিৎসা । বিশেষজ্ঞরা বলছেন তার মুখ লোমমুক্ত করার জন্য তাকে লেজারথেরাপি দিতে হবে এবং সবশেষে দাঁতের চিকিৎসা কারণ দাঁতের চিকিৎসায় অনেক দিন সময় লাগবে। বীথির চিকিৎসার ও সার্জারি করার ব্যাপারে সিএমএইচ সম্মতি জানিয়েছেন।
বীথির চিকিৎসাকে এগিয়ে নিতে বিএসএমএমইউ এবং চিকিৎসকরা সহযোগিতা করছেন জানিয়ে ঐ অধ্যাপক আরো বলেন, ‘আমাদের দেশ গরিব, তাই বিনামূল্যে চিকিৎসা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে গেলে একটা সিস্টেমের মধ্য দিয়েই করতে হয়। ওষুধ এবং অপারেশন-সংশ্লিষ্ট কিছু খরচ রয়েছে। এগুলোর জন্য কিছু টাকা জোগাড় করতে হবে।’
এ ধরনের রোগের বিষয়ে জনগণকে সতর্ক ও কুসংস্কার দূর করতে গণমাধ্যমকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশের আনাচে-কানাচে এমন অনেক রোগী আছেন, যারা লোকলজ্জা ও কুসংস্কারের কারণে চিকিৎসকের কাছে আসেন না। তাদের বলব, এ ধরনের কোনো সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত নিকটস্থ চিকিৎসক কিংবা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে পরামর্শ নিন।’
গত ১৬ এপ্রিল থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যান্ডোক্রিনোলজি (ডায়াবেটিস ও হরমোন) বিভাগের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে অধ্যাপক মো. ফরিদ উদ্দিনের অধীনে চিকিৎসাধীন বীথি। টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলার জয়ভোগ গ্রামের আবদুর রাজ্জাকের তিন সন্তানের মধ্যে বড় বীথি। জয়ভোগ পাবলিক উচ্চবিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির শিক্ষার্থী সে।
প্রতিক্ষণ/এডি/এফএএইচ













